Friday, May 20, 2011

সিলেটে ডা. জামালের নার্সারি বিপ্লব: সবুজ বৃক্ষের তরল স্বর্ণ

সিলেটে ডা. জামালের নার্সারি বিপ্লব: সবুজ বৃক্ষের তরল স্বর্ণ


নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় পাম গাছের নার্সারি করে এলাকায় বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছেন দক্ষিণ সুরমার ডা. জামাল আহমেদ। প্রায় ১০ বছর ধরে তিনি রোপণ করছেন বিভিন্ন ধরনের গাছের চারা। উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের তুড়ুকখলা গ্রামের জামাল আহমেদ হোমিও চিকিৎসক। এ অঞ্চলে তিনি জামাল ডাক্তার নামে বেশ পরিচিত। ২০০৮ সালে মালয়েশিয়া থেকে পাম গাছের বেশ কিছু বীজ সংগ্রহ করে তিনি বাড়ির আঙ্গিনায় রোপণ করেন। রোপণকৃত বীজ থেকে চারা ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে।
পরবর্তীতে তিনি আবার মালয়েশিয়া থেকে ১ লক্ষাধিক পাম গাছের বীজ সংগ্রহ করেন। এ বীজ বাড়ির আঙ্গিনা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী একটি নিজস্ব জমিতে রোপণ করেন। লোকমুখে ছড়িয়ে পড়ে তার সবুজ বৃক্ষের বিস্ময়কর বিপ্লবের কথা। চারা নিতে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন আসেন। অনেকে দেখতে আসেন সবুজ বৃক্ষের তরল স্বর্ণ নামক নার্সারিটিকে। রোপণকৃত চারা বিক্রির সুবিধাকল্পে তিনি দাউদপুর চৌধুরী বাজারে এনসিসি ব্যাংক লালদিঘী শাখার অর্থায়নে জালালাবাদ এগ্রো কমপ্লেক্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। সেখানে পাম গাছের চারা রেখে বিক্রয় করছেন। জালালাবাদ এগ্রো কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা যায়, ছোট বড় প্রায় দেড় লাখ পাম গাছের চারা রয়েছে। প্রতিটি চারা প্রাথমিকভাবে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বীজ সংগ্রহ, চারা রোপণ ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ প্রায় ১ কোটি টাকা তিনি বিনিয়োগ করেন। কাঁদি ধরা চারা তিনি ৩ বছর পূর্বে লাগিয়ে ছিলেন। জনসাধারণকে পাম গাছ রোপণের জন্য উৎসাহিত করতে প্রতি সপ্তাহে ২ দিন তার প্রতিষ্ঠানে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের যৌথ সচিত্র সিডি প্রদর্শন করেন। সিডি ফুটেজ থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, বাংলাদেশে প্রতি গাছে বছরে ১০/১২টি কাঁধি ধরে। প্রতি কাঁদির ওজন মালয়েশিয়াতে ২০-৪০ কেজি হলেও বাংলাদেশে ৪০-৬৫ কেজি পর্যন্ত হচ্ছে। পাম গাছ রোপণের ৩/৪ বছর পর থেকে প্রতি কাদি থেকে কমপক্ষে ৫০ লিটার পাম অয়েল পাওয়া যেতে পারে, যার বাজার মূল্য ৩ হাজার টাকা। বাড়ির আশপাশে ও পতিত জমিতে ১০০টি গাছ রোপণ করলে বছরে ৩ লাখ টাকা আয় হবে। এরই মধ্যে ডা. জামাল দেশের বিভিন্ন স্থানে পাম গাছ রোপণ করে নিজে লাভবান হোন ও দেশকে সমৃদ্ধিশালী করুন নামক সেমিনারে আয়োজন করেন। এ সেমিনার দেশের কৃষিবিদদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। তার নার্সারিতে শুধু পাম গাছের চারাই নয়, অন্যান্য আরও অনেক ফলদ, বনজ এবং ঔষধি গাছের চারা রয়েছে। যা থেকে প্রাপ্ত মাসিক আয় প্রায় ৩০ হাজার টাকা হতে পারে। সুরমা উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ডা. জামালের এ উদ্যোগ নিশ্চয় প্রশংসার দাবিদার। এতে তিনি শুধু আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন না, দেশকেও সমৃদ্ধিশালী করতে কাজ করছেন।
শফিক আহমদ

Source: Bangladesh Pratidin, 18th May-2011

No comments:

Post a Comment