Thursday, May 12, 2011

বাংলাদেশে পাম তেলের চাষ ও তার সম্ভাবনা

বাংলাদেশে পাম তেলের চাষ ও তার সম্ভাবনা
কৃষিবিদ মোঃ জিকরুল হক, দেবীগঞ্জ, পঞ্চগড়, মোবাইলঃ- ০১৭১২৯৬৭৪১৯
ডিজিটাল বাংলাদেশ করতে হলে আমাদের যা করণীয় তা নিম্নরুপ-ক) খাদ্য খ) বাসস্থান গ) চিকিৎসা ঘ) নিরাপত্তা ঙ) তথ্য প্রবাহ, আমাদের সকল পেশার মানুষকে জানতে হবে যে, প্রত্যেক নাগরিক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে খাদ্যের/কৃষির উপর নির্ভরশীল আর পাম তেল তারই একটি অংশ। তথ্যসূত্র মতে বাংলাদেশ গড়ে প্রতি বছর ১২০০ কোটি টাকার তেল আমদানি করে দেশের চাহিদা মিটাচ্ছে। অথচ এই পাম তেল চাষ করে মালয়েশিয়া বিশ্বের ৫৩টি দেশে তৈল রপ্তানী করে হাজার হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। কিন্তু আমরা কা-পুরুষের মত ঘরে বসে আছি। আমরা বাঙ্গালীরা শুধুমাত্র একজন আরেকজনের উপর দোষ চাপাতে ভালবাসি- বাস্তবসম্মত কাজের কাজ কিছু করি না।

অথচ বাংলাদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু পাম চাষের জন্য খুবই উপযোগী যা বাস্তব প্রমান আমার নিজস্ব বাগান। আমার বাগান বেলে দোঁআশ মাটিতে। শুধুমাত্র নিয়মিত পরিচর্যা করার ফলে বর্তমানে ৯০% গাছের ফলের র্বাদা (ফলের কাদি) এসেছে। প্রতি গাছে গড়ে ৮/৯টি করে কাদি এসেছে। আর দোঁআশ, পলি দোঁআশ, কাদা দোঁআশ, এটেল মাটি আরো আরো উপযোগী। আমার গবেষণায় প্রমান পেলাম ফলের অংকুরোদগম (এবৎসরহধঃরড়হ ঝঃধমব) হতে গাছের ফল আসতে সময় লেগেছে ৩ বৎসর ১০ মাস। কারো কারো এর চেয়েও ২/৪ মাস কম-বেশী লাগবে যা মাটির প্রকারভেদ ও এলাকাভেদে নির্ভর করবে। বাংলাদেশ প্রচুর সম্ভাবনাময় এই পাম গাছ। দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর পরিমাণ গাছ/বাগান করা আছে। এখন দরকার সচেতনতা। তবে সবার প্রতি একটি বিষয় বলতে চাই। পাম গাছ চার প্রকার। তার মধ্যে একটি হলো ঙরষ ঢ়ধষস.আমার কাছে একটা জিনিস মনে হচ্ছে কেউ প্রতারনার শিকার হচ্ছেন কিনা? কারন বর্তমানে দেশের আনাচে-কানাচে বিভিন্ন নার্সারীতে প্রচুর পরিমান পাম গাছের চারা পাওয়া যায় যা মাত্র ২০-৩০/- মধ্যে। সন্দেহ হচ্ছে এগুলো আদৌ কি ফল আসবে?


এর জন্য দরকার বিশ্বাসযোগ্যতা/গ্রহণযোগ্যতার চারা। আপনি কারো কাছে চারা ক্রয় করলে নিম্নের বিষয়গুলি জিজ্ঞাসা করে নিন-

(ক) ফল পরিপক্ক ছিল কি না?

(খ) ফল পোকা খাওয়া ছিল কি না?

(গ) ফল রোগাক্রান্ত ছিল কি না?

(ঘ) কোন টেকনিক্যাল লোক দিয়ে চারা করা হয়েছে কি না?

(ঙ) অংকুরোদগমের ১৮ ঘন্টা পূর্বে কোন হরমোন দেওয়া হয়েছে কি না?

(চ) ১০০% গাছের ফল আসবে এর নিশ্চয়তা দিতে পারবে কি না?

(ছ) কত দিনের মধ্যে ফল আসবে তার সময়সীমা।


উপরের তথ্যগুলো সঠিকভাবে পেলে আপনি তার কাছ থেকে সহজেই চারা গ্রহণ করতে পারবেন এবং লাগাতে পারবেন। (টেকনিক্যাল লোক বলতে কোন কৃষিবিদ অবশ্যই থাকতে হবে)।

এখন বলতে চাই দেশের বড় বড় কোম্পানী, এনজিও ব্যবসায়ী অথবা নতুন যারা ব্যবসা করতে চান/সরকারের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে অনুরোধ করব। আমি ছোট পরিসরের একজন কৃষিবিদ। তারপরেও বলব দেশে এখন বিভাগ প্রতি ৩টি করে মিল/কারখানা স্থাপন করা প্রয়োজন। মিল/কারখানার ংরুব ্ ংযধঢ়ব হবে ৫০ মেঃ টন/৩০ মেঃ টন। প্রতি বিভাগে ২টি কারখানা হবে শুধুমাত্র ক্রুড তেল তৈরীর জন্য আর অন্যটি হবে রিফাইনিং কারখানা। যেখান থেকে সরাসরি বাজারজাত হয়ে ভোক্তার ঘরে চলে যাবে। এতে করে দেশের বিশাল একটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে যা দেশের বেকারত্ব দুর করতে সাহায্য করবে এবং তা মোট জনসংখ্যার ১% বেকারত্ব দুর করা সম্ভব হবে। আনন্দের বিষয় হলো যে, দেশের মোট জনসংখ্যার দ্বিগুন মানে ১৫ কোটি মানুষ যদি ২টি করে পাম গাছ লাগায় তাহলে ৩০ কোটি পাম গাছ লাগালে শুধুমাত্র দেশের অভ্যান্তরীন চাহিদা মিটাতে সময় লাগবে প্রায় ১২ বৎসর। তারপর আমরা বিদেশে রপ্তানীর চিন্তা করতে পারব। এবং আমাদের দ্বারা ১৮টি দেশে পাম ওয়েল রপ্তানী করা সম্ভব হবে ইনশাআল্লাহ।


আরেকটি বিষয় হলো- যদি কৃষকের কাছ থেকে ২০-২৫/- দরে পাম ফল ক্রয় করা যায় এবং তৈল তৈরীর পর ঐ কৃষকের কাছে ৬০/- কেজি দরে বিক্রি করা যায় তার পরেও ব্যবসায়ীরা কেজিতে কমপক্ষে ১৫/- লাভ করতে পারবে। খরচ যা ধারা হবে তা হলো-

(ক) পাম ফলের দাম (খ) পরিবহন খরচ (গ) মিলিং খরচ (ঘ)প্যাকেট খরচ (ঙ) সিলগালা খরচ (চ) বিভাজন খরচ (ছ) সেলস অফিসার (জ) অফিসার (ঝ) মধ্যম লেবেল অফিসার (ঞ)শ্রমিক (ট)টপ লেবেল (ঠ)ভাড়া অন্যান্য সহ মোট ৪৫.২৫/- প্রতি কেজি হবে। বিক্রি ৬০/- প্রতি কেজি।


আসুন আমরা এখন বাজারজাত করনের জন্য চিন্তা করতে পারি এবং শুরু করতে পারি।
Source: http://krishiprojukti.com

No comments:

Post a Comment