Tuesday, May 17, 2011

পাম চাষে বহুমুখী লাভ

পাম চাষে বহুমুখী লাভ

পাম গাছের ফল প্রক্রিয়াজাত করে যে তেল পাওয়া যায় তাকে পাম তেল বলে। পাম ফলের মাংশল ও বীজ হতে তেল পাওয়া যায়। মাংশল অংশ হতে যে তেল পাওয়া যায় তার নাম পাম তেল, আর বীজ (কার্নেল) হতে যে তেল পাওয়া যায় তার নাম পাম কার্নেল তেল। মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের শতকরা ৮০ ভাগ পাম তেল উৎপাদন করে। পাম তেলের আদি উৎস পশ্চিম আফ্রিকা। পাম তেলের মিশরে আবির্ভাব ঘটেছে সম্ভবত পশ্চিম আফ্রিকা থেকে। ১৯৭৯ সালে কক্সবাজার এবং সিলেট বনবিভাগকে ছয় মাস বয়সের চারা রোপণের জন্য সরবরাহ করা হয় । ১৯৮১ সালে কক্সবাজারে ৩২৫ একর, চট্টগ্রামে ২৭৯ একর এবং সিলেটে ১৮০ একর মিলে মোট ৭৮৪ একর পাম চাষের আওতায় আনা হয়। বাংলাদেশের বর্তমান ভোজ্য তেলের চাহিদা প্রায় ১২ লাখ মেট্রিক টন। দেশের চাহিদার মাত্র শতকরা ১০ ভাগ তেল দেশে উৎপাদিত হয় বাকি শতকরা ৯০ ভাগ তেলের জন্য বিদেশের ওপর নির্ভর করতে হয়।

সদ্য আহরিত পাম তেল বিটা ক্যারোটিনের সমৃদ্ধতম উৎস। পাম তেলে টোকোফেরল ও টোকোট্রায়েনল নামক দুই ধরনের ভিটামিন 'ই' অধিক পরিমাণে থাকে। অন্যান্য উদ্ভিজ্জ ভোজ্য তেলের মতো পাম তেলও কোলেস্টেরলমুক্ত। পাম তেল রক্তের জমাট বাঁধার প্রবণতা হ্রাস করে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। লাল পাম তেলে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন এবং ভিটামিন 'ই' থাকে। যা গাজরের চেয়ে ১৫ গুন এবং টমেটোর চেয়ে ৩০০ গুন বেশি। লাল পাম তেল ক্যারোটিনয়েডের উৎস হওয়ায় কয়েক ধরনের ক্যান্সারকে কার্যকরভাবে প্রতিহত করতে পারে। পাম তেলের কোলেস্টেরল ৫০ পি.পি.এম.এর নিচে। যা (১৩-১৯) পি.পি.এম. এর মধ্যে। পরিশোধিত পাম তেল গন্ধহীন হওয়ায় এর দ্বারা ভাজা খাদ্যেও স্বাভাবিক গন্ধ বজায় থাকে। পাম গাছ চাষের জন্য মোটামুটি তাপমাত্রা ২২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড থেকে ৩২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড হলে ভালো। প্রতি হেক্টর জমিতে ১২০টি থেকে ১৫০টি চারা অথবা ৯.৫ মিটার দূরে দূরে প্রতি হেক্টর জমিতে ১২৮টি চারা রোপণ করা যায়। বীজ হতে চারা তৈরি করতে এক বছর সময় লাগে। চারা রোপণের তিন থেকে চার বছরের মধ্যে ফল ধরে। রোপিত চারা ত্রিশ বছর বয়স পর্যন্ত ফল দিতে পারে।

আরশেদ আলী চৌধুরী, মেহেরপুর

No comments:

Post a Comment