Thursday, May 19, 2011

বান্দরবানে ৩ একর জমির পাম গাছে ফল

বান্দরবানে ৩ একর জমির পাম গাছে ফল

বান্দরবান পার্বত্য জেলায় পাম ওয়েল চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। জেলা সদর থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে রাজভিলা ইউনিয়নের বাগমারা এলাকায় কাজল মাস্টারের পাম ওয়েল বাগানে ফুল ও ফল আসতে শুরু করেছে।

তার বাগানে ২ বছর ৩ মাস বয়সী ৪শ’টি পাম গাছের মধ্যে ২৫০টিতেই ফুল ও ফল আসায় এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। কৃষকদের মধ্যে সম্ভাবনাময় পাম চাষের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। মঙ্গলবার সকালে বাগমারায় কাজল মাস্টারের বিশাল পাম চাষ বাগান পরিদর্শনকালে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাগামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং আদর্শ ফলদ-বনজ ও পাম চাষী কাজল কান্তি দাশ জানিয়েছেন, তিনি ২ বছর ৩ মাস আগে বিশেষ ব্যবস্থায় সংগ্রহ করে প্রায় ৩ একর ভূমিতে ৪শ’টি পাম ওয়েল গাছের চারা রোপণ করেন। বান্দরবান সেনা রিজিয়নের সহায়তায় ওইসব পাম চারা সংগ্রহ করার পর পরীক্ষামূলকভাবে পাম চারাগুলো রোপণ করা হয় জমিতে। নিয়মিত পরিচর্যার কারণে একটি চারাও মারা যায়নি,সবগুলো সবল হয়েই ক্রমবিকাশ ঘটছে।তিনি বলেন, চারা লাগানোর মাত্র ১বছর ৩ মাস সময়ের মধ্যেই গত বছর প্রায় ২০টি গাছে ফুল আসে, তবে ফল তেমন ধরেনি। চলতি মৌসুমে ৪শ’টি পাম গাছের মধ্যে প্রায় ২৫০টি গাছে ফুল ও ফল ধরেছে। ঢাকা ও টাংগাইল পাম ওয়েল কোম্পানী থেকে মাঠ কর্মকর্তাদের এ বাগান পরিদর্শনে আসার কথা রয়েছে।

পাহাড়ি জেলা বান্দরবানের ৭টি উপজেলায় বিক্ষিপ্তভাবেই পাম্প ওয়েল চাষ শুরু হয়েছে সাম্প্রতিক সময় থেকে। ফলদ ও বনজ বাগানে সাথী গাছ হিসেবেই মূলত চাষীরা এ পাম গাছের চারা লাগাচ্ছেন। তবে পাম চারার কোন নার্সারী না থাকায় জেলার বাইর থেকেই পাম চারা সংগ্রহ করতে হচ্ছে আগ্রহী চাষীদের। প্রতিটি পাম ওয়েল চারা গড়ে ৬শ’ টাকায় কিনতে হচ্ছে।

বাগমারায় কাজল মাস্টারের বাগানেই সবচেয়ে বেশি পাম গাছ লাগানো হয়েছে। এ পাম বাগান জেলায় একটি মডেল বাগান হিসেবেও সুনাম কুড়িয়েছে। জেলায় স্থানীয়ভাবে পাম চাষের ব্যাপারে পরামর্শ বা দিক-নির্দেশনা প্রদানের কোন কর্তৃপক্ষ না থাকা সত্বেও পাম চাষের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজল মাস্টার বিশাল পাম বাগান গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন।

পাহাড়ের গ্রামে গ্রামেই সম্প্রসারিত হচ্ছে এ পাম চাষ। ১০-২০টি করে পাম চারা রোপণ করেছেন অনেকেই তাদের ফলদ বাগানে। আগামী ৫ বছরের মধ্যেই পুরোদমে পাম গাছে পাম উৎপন্ন হবে। এতে প্রতিটি পাম গাছে প্রতিমৌসুমে গড়ে ৫২ কেজি পর্যন্ত পাম ফল এবং কাঁচা পাম তেল সংগ্রহ করা সম্ভব বলেও কাজল মাস্টার জানান।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক উদয়শংকর মুৎসুদ্দী জানান, জেলার মাটি এবং আবহাওয়া পাম চাষের জন্য অনুকূল ও খুবই উপযোগী। চাষীরা সহজ ও কমমূল্যে পাম চারা পেলে অর্থকরী এ পাম চাষ দ্রুত সম্প্রসারণ করা যেতে পারে। বেসরকারি তথ্যানুযায়ী জেলায় বর্তমানে শতাধিক একরের জমিতে পাম চাষ হচ্ছে বলে জানা গেছে।
Source: www.dainikazadi.org, 21th May-2011

No comments:

Post a Comment